হাসপাতালে দুদকের আকস্মিক অভিযান, ৬২% ডাক্তার অনুপস্থিত
দেশের বিভিন্ন স্থানের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে অভিযান চালিয়ে চিকিৎসকদের ৬২ শতাংশ অনুপস্থিতি পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার ঢাকাসহ মোট ৮ জেলায় দুদকের ১০টি এনফোর্সমেন্ট টিম সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এসব অভিযান পরিচালনা করে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, আট জেলার ১০টি হাসপাতালে মোট রোস্টার ডিউটি বণ্টনকৃত চিকিৎসকের সংখ্যা ২৩০ জন থাকলেও কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত পাওয়া যায় ৯২ জন চিকিৎসককে, যা মোট চিকিৎসকের ৪০ শতাংশ।
ঢাকার বাইরের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে এ চিত্র আরো ভয়াবহ। ঢাকার বাইরের সাত জেলার মোট হাসপাতালে রোস্টার ডিউটি বণ্টনকৃত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৩১ জন থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন ৮১ জন। এক্ষেত্রে অনুপস্থিতির হার মোট চিকিৎসকের প্রায় ৬১.৮ শতাংশ।
ঢাকায় অভিযান চালানো হাসপাতালগুলো হলো মহানগর এর কর্মচারী হাসপাতাল ফুলবাড়িয়া নাজিরা বাজার মা ও শিশু সদন, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল।
এদিকে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে অভিযানকালে জরুরি বিভাগের এক কর্মচারী (স্ট্রেচার বিয়ারার) দায়িত্বরত অবস্থায় রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণকালে দুদক টিমের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন। দুদক টিমের সুপারিশক্রমে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
ভুক্তভোগী রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা/মফস্বলে পর্যাপ্ত চিকিৎসকদের নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে বাইরে প্রাইভেট প্র্যাকটিসে সময় দেন। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শীর্ষ কর্মকর্তারা মাসের বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। এ সুযোগে কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসাররাও কর্মস্থলে ঠিকমতো হাজির থাকেন না। অনেকে সপ্তাহে দু’একদিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে পুরো মাস অনুপস্থিত থাকেন এবং পুরো মাসের বেতন উত্তোলন করেন।
এ প্রসঙ্গে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের সমন্বয়ক দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘স্বাস্থ্য সেক্টরে এ অবক্ষয় অত্যন্ত দুঃখজনক। মানবসেবার চেতনা না থাকলে চিকিৎসা সেবা পরিত্যাগ করা উচিৎ। তবে দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে দুদক কঠোর অবস্থান নেবে। সারাদেশের স্বাস্থ্যখাত দুদকের নজরদারীতে থাকবে।’