হুয়াওয়ে প্রতিষ্ঠাতার মেয়ের গ্রেফতারে রাজনীতি নেই: ট্রুডো
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, সেখানে চীনের টেলিকম প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে কোনো রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হয়নি।
হুয়াওয়ের চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার এবং সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে মেং ওয়াংঝুকে ভ্যাঙ্কুভার এয়ারপোর্টে গ্রেফতার করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে মেংকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে মার্কিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।
চীন এই গ্রেফতারকে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে মেংয়ের মুক্তি দাবি করেছে।
তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি। হুয়াওয়ে বলছে, তারা ‘মেংয়ের কোনো অপরাধের কথা জানে না’। শুক্রবার মেংয়ের জামিন শুনানির দিন রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে গ্রেফতার হলেন মেং। এ বছর দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তারা একে অপরের পণ্য আমদানিতে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করে।
কিন্তু, এই গ্রেফতারে চীন মারাত্মক ক্ষুব্ধ হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে মেংকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকতে পারে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন সাংবাদিকদের এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি।
প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে ঢালাও মন্তব্যে বল্টন জানান, চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এবং সরকারের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করার সম্ভাবনায় তিনি উদ্বিগ্ন।
হুয়াওয়ে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ টেলিকম যন্ত্র নির্মাতা। সম্প্রতি তারা অ্যাপলকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাতার স্থান দখল করে। তাদের সামনে রয়েছে কেবল স্যামসাং।
মেং তার গ্রেফতারের কোনো তথ্য প্রকাশের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা চাইলে কানাডার বিচারক তা মঞ্জুর করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।
কানাডার কর্তৃপক্ষ বুধবারের আগে তার গ্রেফতারের খবর প্রকাশ করেনি। ওইদিন তিনি প্রথম কোর্টে উপস্থিত হন।
মন্ট্রিলে ট্রুডো সাংবাদিকদের বলেন, তার সরকারকে এই গ্রেফতারের বিষয়ে জানানো হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে।
হুয়াওয়েকে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে পশ্চিমা কয়েকটি দেশের সরকার।
হুয়াওয়ের মাধ্যমে চীন বিভিন্ন দেশে ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্কের যথেচ্ছ প্রবেশাধিকার পাবে এবং এটিকে তাদের কাজে ব্ব্যহার করতে পারবে বলে সন্দেহ করছে তারা।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে বন্ধ করা হয়েছে হুয়াওয়ের যন্ত্রের ব্যবহার। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ওয়ারলেস নেটওয়ার্কে চীনের হুয়াওয়ে ও জেডটিই’র তৈরি ফাইভ-জি টেকনোলজির ব্যবহার আটকে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনও হুয়াওয়ের তৈরি যন্ত্রের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জার্মানি, জাপান ও কোরিয়াও ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করেছে এগুলোর বিষয়ে।