৪২ আসনে ছাড়, ৩০০ আসনে মহাজোটের প্রার্থী কারা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজেদের জন্য ২৫৮ আসন রেখে বাকি ৪২টি জোটের শরিক দলগুলোকে ছেড়ে দিয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিনে রোববার রাতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে চূড়ান্ত তালিকা দিয়ে তাদের জন্য প্রতীক বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়েছে।
এতে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের ২৫৮ নেতা ছাড়াও শরিক দলগুলোর ১৪ নেতা দলটির জন্য সংরক্ষিত প্রতীক ‘নৌকা’ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
আর বর্তমান সরকারের মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ তার দল জাতীয় পার্টির (জেপি) দুই নেতা বাইসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মূলত নিজ দলের ২৫৮ ছাড়া, শরিকদের মধ্যে ১৬ প্রার্থীর নাম দেয়া হয়েছে।
কিন্তু, একই দিন মহাজোটের শরিক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা) ১৭৩ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা দিয়ে তাদের জন্য ‘লাঙ্গল’ প্রতীক বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়েছে।
জাপার এই তালিকায় আওয়ামী লীগ তাদের ২৯টি আসন দিয়েছে দাবি করে তার একটি তালিকাও দিয়েছে। যদিও বাকি শরিকদের জন্য বরাদ্দকৃত আসন বাদ দিলে তিনটি আসনে মহাজোট উন্মুক্ত রেখেছে।
তালিকায় ওয়ার্কার্স পার্টির ৫ নেতা নৌকা প্রতীক চেয়েছেন। তারা হলেন, ঠাকুরগাঁও-৩ মো. ইয়াসিন আলী, রাজশাহী-২ ফজলে হোসেন বাদশা, সাতক্ষীরা-১ অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, বরিশাল-৩ টিপু সুলতান এবং ঢাকা-৮ রাশেদ খান মেনন।
জাসদের ৩ নেতা নৌকা প্রতীক চেয়েছেন। তারা হলেন, কুষ্টিয়া-২ আসনে হাসানুল হক ইনু, ফেনী-১ শিরীন আখতার ও বগুড়া-৪ আসনে একেএম রেজাউল করিম তানসেন।
তবে জাসদ তাদের দলীয় প্রতীক মশাল নিয়ে ৫ নেতাকে ভোটে রেখেছেন। তারা হলেন, ব্রাহ্মণাবাড়িয়া-৫ অ্যাডভোকেট শাহ জিকরুল আহমেদ, গাইবান্ধা-৩ এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি, ময়মনসিংহ-৬ সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু, রংপুর-২ কুমারেশ চন্দ্র রায় ও বরিশাল-৬ মো. মোহসীন।
তরিকত ফেডারেশনের ২ নেতাকে নৌকা প্রতীক দেয়ার অনুরোধ করে ইসিতে চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারা হলেন, লক্ষ্মীপুর-১ আনোয়ার হোসেন খান ও চট্টগ্রাম-২ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।
বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদলকে চট্টগ্রাম-৮ আসনে নৌকা প্রতীক দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিকল্পধারার ৩ নেতাকেও নৌকা প্রতীক দেয়ার অনুরোধ করেছে আওয়ামী লীগ। তারা হলেন, মুন্সীগঞ্জ-১ মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মৌলভীবাজার-২ এমএম শাহীন ও লক্ষ্মীপুর-৪ মেজর (অব.) আবদুল মান্নান।
এ ছাড়া মহাজোটের শরিক হিসেবে জাতীয় পার্টির (জেপি) দুই নেতাকে তাদের দলীয় প্রতীক বাইসাইকেল দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা হলেন, পিরোজপুর-২ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও কুড়িগ্রাম-৪ মো. রুহুল আমিন।
এদিকে, ইসিতে দেয়া চিঠিতে জাতীয় পার্টি দাবি করেছে, জোটের শরিক হিসেবে তাদের ২৯টি আসন দিয়েছে আওয়ামী লীগ, যেখানে নৌকার কোনো প্রার্থী থাকবে না। লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এসব আসনের প্রার্থীরা হলেন, নীলফামারী-৩ মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল, নীলফামারী-৪ আহসান আদেলুর রহমান, লালমনিরহাট-৩ গোলাম মোহাম্মদ কাদের, রংপুর-১ মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, রংপুর-৩ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, কুড়িগ্রাম-১ একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, কুড়িগ্রাম-২ পনির উদ্দিন আহমেদ, গাইবান্ধা-১ ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বগুড়া-২ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বগুড়া-৩ নুরুল ইসলাম তালুকদার, বগুড়া-৬ মো. নুরুল ইসলাম ওমর, বগুড়া-৭ অ্যাডভোকেট আলতাফ আলী, বরিশাল-৩ গোলাম কিবরিয়া টিপু, বরিশাল-৬ নাসরিন জাহান রতনা, পিরোজপুর-৩ ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, টাঙ্গাইল-৫ শফিউল্লাহ আল মুনির, ময়মনসিংহ-৪ বেগম রওশন এরশাদ, ময়মনসিংহ-৮ ফখরুল ইমাম, কিশোরগঞ্জ-৩ মজিবুল হক চুন্নু, ঢাকা-৪ সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ঢাকা-৬ কাজী ফিরোজ রশীদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ-৫ সেলিম ওসমান, সুনামগঞ্জ-৪ পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ, সিলেট-২ ইয়াহ ইয়া চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ জিয়াউল হক মৃধা, ফেনী-৩ লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, লক্ষ্মীপুর-২ মো. নোমান ও চট্টগ্রাম-৫ আসনে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
মহাজোটের বাইরে গিয়েও ১৪৪টি আসনে দলীয়ভাবে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি।